ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ডাইনিংয়ে কাঁচের টুকরো পাওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মঙ্গলবার (১৭ জানুয়ারি) রাতের খাবার গ্রহণের সময় হিসাব বিজ্ঞান ও তথ্য পদ্ধতি বিভাগের ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের মাহতাব নামের এক শিক্ষার্থী এ অভিযোগ করেছেন।

এ নিয়ে হলে থাকা শিক্ষার্থীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। এসময় হলের খাবারের মান নিয়ে নানা অভিযোগ করতে দেখা গেছে শিক্ষার্থীদের।

প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে, মাহতাব নামে এক শিক্ষার্থী রাতের খাবার গ্রহণের সময় খাবারে কাঁচ পেয়েছে। এসময় সে কাঁচটি গিলে ও চিবানোর সময় মুখে হালকা আঘাত পায়। পরে তাকে প্রাথমিক চিকিৎসার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেলে পাঠানো হয়। এমন ঘটনা হলগুলোতে নতুন নয়।

এদিকে শিক্ষার্থীরা হলের খাবারে প্রায়শই বিভিন্ন পোকা-মাকড় ও আবর্জনা পান বলে অভিযোগ করেছেন। গত বছরের মে মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হলের খাবারে এক শিক্ষার্থী তেলাপোকা পেয়েছিলেন। এছাড়াও পঁচা ডিম এবং বাসী খাবার দেয়ারও অভিযোগ রয়েছে। এতে অনেক সময় শিক্ষার্থীরা পেটের সমস্যাসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েন।

ভুক্তভোগী মাহতাব জানান, ডাইনিংয়ে রাতের খাবার গ্রহণের সময় মুখের ভিতরে পাথরের মত কিছু লাগছিলো বলে অনুভব করছিলাম। যখন আমি খাবার চিবানো শুরু করি, মুখের মাঝে হালকা আঘাত পাই এবং দেখি সেটি গলায় বাঁধে। কাঁচটি পেয়েছিলাম ডালের ভিতরে। পরে সেটি আমি খাবারের প্লেটটি ফেলে দেই, যাতে অন্যান্যরা সতর্ক হয়। পরবর্তীতে মেডিকেলে আসলে তারা প্রাথমিক চিকিৎসা প্রদান করে।

হলের খাবারের মান জিয়া হলের শিক্ষার্থী শামীম রেজা বলেন, ডাইনিং এর খাবারের মান এতটাই খারাপ যে মাঝে মধ্যেই শিক্ষার্থীদের পাকস্থলীর অসুখে পড়তে হয়।
আমি নিজেও অসুস্থ হয়েছি ডাইনিংয়ের খাবার খেয়ে। এছাড়াও ডাইনিংয়ের ভাতের চাউল টা খুবই নিম্নমানের। রান্না করা তরকারিতে পোকা ও পাথর পাওয়ার কাহিনী নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। আজ আবার কাচের টুকরো পাওয়া গেছে। তাই জিয়া হলের শিক্ষার্থী হিসেবে আমাদের চাওয়া খাবার যেন স্বাস্থ্যসম্মত হয়। এদিকে হল প্রশাসনের নজর দেয়ার অনুরোধ করছি।

জিয়া হলের শিক্ষার্থী আতিকুল ইসলাম বলেন, খাবারের মান ভাল করার কথা বললে প্রথমেই আসে ভর্তুকির কথা এটা নাই সেটা এসব কথাই তারা বলে থাকে। দাম ও বাড়াবে মান খারাপ করবে এটা এক সাথে চলতে পারেনা। এছাড়াও তিনি ডাইনিং ম্যানেজারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, সে প্রায় সময় শিক্ষার্থীদের সাথে খারাপ ব্যবহার করে থাকেন। জুনিয়র পেলে তো কোন কথাই নেই। আমরা খাবার সমস্যাসহ এর সমাধান চাচ্ছি।

অভিযুক্ত জিয়া হলের ডাইনিং ম্যানেজার রফিক বলেন, বিভিন্ন সময়েই তো শিক্ষার্থীরা আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলে থাকে। প্রভোস্টের সাথে আলোচনায় বসে সেখানে কথা হবে। শিক্ষার্থীরা চাইলে ডাইনিং চালাবো না চাইলে ছেড়ে দিব। তবে কাঁচের বিষয়টি তারা অস্বীকার করেছেন।

এ বিষয়ে হল প্রফেসর ড. মনজুরুল হক প্রভোস্ট বলেন, আমি কাঁচের বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত হয়েছি। যেটা পেয়েছে এটা অবশ্যই খারাপ জিনিস, যদি সত্যি হয়ে থাকে। কাঁচ, পোকা যাই হোক না কেন। আমরা চেষ্টা করি ডাইনিংয়ে যাতে একটু হলেও মান সম্মত খাবার পরিবেশন করা হয়। এ বিষয়ে আলোচনা করে সমাধানের চেষ্টা করবো যাতে এমন ঘটনা আর না ঘটে।